২০২৪ সালে বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোষাক শিল্পখাত দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রেখে ছিল

- ডেস্ক রিপোর্ট:
- 09 Jul, 2025
বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোষাক শিল্পখাত নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিএ) তথ্য অনুযায়ী, গত বছর বাংলাদেশ ৩৮ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। এর আগের বছরের তুলনায় শূন্য দশমিক ২১ শতাংশ বেশি। অর্থাৎ চীনের পরই বাংলাদেশের অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। তৃতীয় অবস্থান ধরে রেখেছে ভিয়েতনাম।
ডব্লিওটিএ বলছে, বিশ্ব বাজারে পোশাক রপ্তানিতে চতুর্থ স্থানে অবস্থান করছে তুরস্ক। এরপর আছে ভারত, কম্বোডিয়া ও পাকিস্তান। যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নবমে এবং অষ্টমে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া।
ট্রাম্প প্রশাসনের পাল্টা শুল্ক আরোপের কারনে বাংলাদেশের তৈরি পোষাক শিল্পখাতটি এখন হুমকিতে পড়ার আশংকা করছেন ব্যবসায়ীরা। কারণ হিসাবে বলছেন, এমনিতেই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোষাক রফতানীর ক্ষেত্রে ১৫শতাংশ শুল্ক দিতে হতো। এখন ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন করে ৩৫শতাংশ হারে শুল্ক আরোপের ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোষাক শিল্প খাতকে যুক্তরাষ্ট্র্রের বাজারে ব্যবসা করতে হলে ৫০শতাংশ হারে শুল্ক দিতে হবে। এতে প্রতিদ্বন্ধি অনান্য দেশ থেকে পিছিয়ে পড়বে বাংলাদেশের তৈরি পোষাক শিল্প খাত।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ছাড়াও জুতা, টুপি, তাঁবু, ব্যাগ, আসবাব এবং বিভিন্ন খাদ্যপণ্য রপ্তানি হয় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। গত অর্থবছরে ১৭৬টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান রপ্তানির জন্য শতভাগ যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল ছিল। যুক্তরাষ্ট্রে রফতানী করা ৭০৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রফতানী করছে ৩১৯টি প্রতিষ্ঠান, যা অর্ধেকের বেশি।
ডব্লিটিও বলছে, ২০২৪ সালে বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশী পোষাক রফতানী হয়েছে ৫৫৭ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার। এক বছর আগে বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির অংশ ছিল সাত দশমিক ৩৮ শতাংশ।
২০২৪ সালে চীন শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ ছিল। বিশ্ব বাজারে এর অংশ ছিল ২৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ। ২০২৪ সালে দেশটি ১৬৫ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। এটি আগের বছরের তুলনায় শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি।
২০২৩ সালে বৈশ্বিক পোশাক রপ্তানিতে চীনের অংশ ছিল ৩১ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
২০২৪ সালে ভিয়েতনাম তৃতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হওয়া সত্ত্বেও চীন ও বাংলাদেশ তুলনায় এর রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বেশি হয়েছে। ২০২৪ সালে দেশটি ৩৩ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছিল। এটি আগের বছরের তুলনায় নয় দশমিক ৩৪ শতাংশ বেশি।
ভিয়েতনামের পোশাক রপ্তানির হিসাব এক বছর আগের পাঁচ দশমিক ৯৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৪ সালে ছয় দশমিক শূন্য নয় শতাংশে উঠে আসে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)বলছে, গত অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশে ৮৭৬ কোটি ডলার মুল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে। এর মধ্যে তৈরি পোশাকের রপ্তানি রফতানী হয়েছে ৭৫৯ কোটি ডলার।
এদিকে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড(এনবিআর) বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রতিষ্ঠান ভেদে ১ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত পণ্য রপ্তানি করছে ২ হাজার ৩৭৭ প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ৮০১টি প্রতিষ্ঠানের মোট রপ্তানির ৫০ শতাংশের বেশি রপ্তানি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে।
এই ৮০১টি প্রতিষ্ঠান গত অর্থবছর যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মোট রপ্তানি করেছে ৬৬২ কোটি ডলার। এর মধ্যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করেছে ৫০৫ কোটি ডলার, যা যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৫৮ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্র যদি তাদের নতুন আরোপিত শুল্ক অব্যহত রাখে তা হলে বাংলাদেশসহ বিশে^র অনান্য দেশকে নতুন বাজার খোঁজার প্রতিযোগিতায় নামতে হবে। এতে বাংলাদেশ তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে পড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব পড়বে বলেও মনে করেন তারা।
Leave a Reply
Your email address will not be published. Required fields are marked *
সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
