সাদা পাথর লুটের ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট: আইন শৃংখলা বাহিনীর অভিযান

- ডেস্ক রিপোর্ট:
- 14 Aug, 2025
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ এলাকায় সাদা পাথর লুটের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তালিকা আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি লুট হওয়া সব পাথর সাত দিনের মধ্যে আগের স্থানে ফেরত দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
এ ছাড়া, একই ঘটনার দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়ে করা আরেকটি রিটের শুনানির তারিখ আগামী রোববার (১৭ আগস্ট) নির্ধারণ করেছে হাইকোর্টের অন্য একটি বেঞ্চ। বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের বেঞ্চে ওই রিটের শুনানি হবে। আদালতে এ রিট উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট মীর একেএম নূরুন নবী।
ঘটনাটির পর দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে এবং ভোলাগঞ্জ এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েনের আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। রিটে আরও দাবি করা হয়েছে—পাথর লুটের ঘটনায় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কেন নিষ্ক্রিয় ছিলেন, তা আদালত যেন অবৈধ ঘোষণা করে। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে রুল জারিরও আবেদন করা হয়েছে।
৩৫ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার, ৭০ ট্রাক আটক
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথরে অবৈধ পাথর লুট ও পাচারের বিরুদ্ধে বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন।
অভিযানে চেকপোস্টে থামিয়ে প্রায় ১৩০টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। এর মধ্যে ৭০টি ট্রাক থেকে প্রায় ৩৫ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করে ধলাই নদীতে ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আক্তার মিতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জেলা প্রশাসনের সূত্র জানিয়েছে, উদ্ধার করা পাথরের বড় অংশ ইতিমধ্যে ধলাই নদীতে ফেরত দেওয়ার কাজ চলছে, যাতে প্রাকৃতিক প্রবাহ ও পরিবেশ পুনরুদ্ধার হয়। পাশাপাশি রাতেই অবৈধ পাথর লুটের সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে নেমেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রভাবশালী চক্র সাদাপাথর এলাকায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও পাচারে জড়িত। সাম্প্রতিক সময়ে এই লুটপাট এত বেড়েছে যে নদীর তীরবর্তী প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অবৈধভাবে উত্তোলিত সব পাথর উদ্ধার এবং জড়িতদের আইনের আওতায় না আনা পর্যন্ত অভিযান চলবে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আক্তার মিতা বলেন, ‘প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা ও পরিবেশ বাঁচাতে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন, মজুত বা পাচারে জড়িতদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। গতরাত থেকে চেকপোস্টে প্রায় ১৩০টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়েছে, যার মধ্যে ৭০টির পাথর সাদাপাথর এলাকা থেকে আনা বলে শনাক্ত হয়। সেগুলো পুনরায় নদীতে প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
Leave a Reply
Your email address will not be published. Required fields are marked *
সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
